স্যারের সামনে হাত কচলাইতে হয় নাই
প্রতিক্ষণ ডেস্ক
ধারণা নাম্বার এক- “মুহাম্মদ জাফর ইকবাল স্যার কোন নতুন প্রকাশককে তার পাণ্ডুলিপি দেন না”।
ধারণা নাম্বার দুই – “তার পাণ্ডুলিপি পাবার জন্য প্রকাশক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার পরের ধাপেই টাকা জমানো শুরু করতে হবে। যে কোন পাণ্ডুলিপি দেয়ার আগে তিনি কম করে হলেও দুই লাখ টাকা এডভান্স নেয়”।
ধারণা তিন -“স্যারের সামনে যেয়ে পর্যাপ্ত হাত কচলাইতে হয়। হাতে এবং মুখে পর্যাপ্ত তেল, ঘি, মাখন না থাকলে এবং সেই তেল তাকে না লাগাইলে সে পাণ্ডুলিপি দিবে না। “
ধারণা চার -” সকল প্রস্তুতি নেবার পর তার শিডিউল নেয়ার চেষ্টা করা যেতে পারে। সেটাও ছয় মাস থেকে এক বছরের চেষ্টার ফল। “
পাললিক সৌরভ শুরু করার এক মাসের ভেতরে উপরোক্ত সকল ধারণা নিলাম এবং যত্ন সহকারে ছুড়ে ফেলে দিয়ে একদিন রাতে আমি আর শোয়েব সিলেটের বাসে উঠে বসলাম। আমরা জানি যে সকাল ১০ টার ভেতর স্যার শাবিতে তার অফিসে চলে আসেন। ভোরে শাবিতে চা খেয়ে স্যারের রুমের বাইরে দাঁড়িয়ে আছি। কিছুক্ষণের মধ্যেই স্যার এলেন। আমাদের সাথে শাবির ছোট ভাই সিব্বির।
একটা কথাও ঘুড়িয়ে পেঁচিয়ে না বলে যা বলেছিলাম তা এমন -“আমরা পাঠক ছিলাম স্যার। জীবনের সবথেকে বড় অংশ বই পড়ে কাটাইছি। চাকরিতে মন বসে নাই। অন্য ব্যাবসাও আমাদের দিয়ে হবে না। নাকের কাছে বইয়ের গন্ধ ছাড়া কিছু ভাল লাগে না। প্রকাশনা ব্যাবসায় এসেছি। এসে যতটুকু বুঝেছি, আপনার বই ছাড়া টিকা যাবে না। আমরা টিকে যেতে চাই স্যার। আপনি আপনার পাণ্ডুলিপি দেন আমাদের।”
স্যার সকল ধারনাকে মিথ্যা প্রমাণ করে শিশুদের নিয়ে লিখা অসাধারণ একটি গল্পের পাণ্ডুলিপি আমাদের দিয়ে দিয়েছেন। এক টাকাও এডভান্স দিতে হয় নাই। হাত কচলাইতে হয় নাই। প্রকাশক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতেও হয় নাই। শুধু টানা একঘণ্টা চশমার ওপর দিয়ে তার জহুরীর মতো একজোড়া চোখ অপলক আমাকে আর শোয়েবকে দেখেছে।
অমর একুশে বইমেলা ২০১৬ তে পাললিক সৌরভ থেকে প্রকাশিত হচ্ছে মুহাম্মদ জাফর ইকবালের শিশুতোষ গল্পের বই “মুশি হলো খুশি”।
বইটি পাওয়া যাবে একমাত্র এবং একমাত্র পাললিক সৌরভ, ১২৫ নাম্বার স্টল, সোহরাওয়াদি উদ্যান, অমর একুশে বইমেলা ২০১৬ তে।
তামান্নার সেতুর ফেসবুক পাতা থেকে এই লাইনগুলো হুবহু নেয়া হয়েছে।